Sunday, December 31, 2017

কীভাবে বাইং হাউজ প্রোগ্রামে সংযুক্ত হবেন






প্রিয় সুধী,
গার্মেন্ট্‌স বাইং হাউজের ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেবার জন্যে আপনাকে অভিনন্দন। এটি একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত যা আপনার জীবনে টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। এজন্যে প্রথমেই আপনাকে অনুরোধ করছি- মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটির শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 
   
PIGFT পরিচালিত Buying House Operation Courseটি কোন বাণিজ্যিক (Commercial) কোর্স নয়; এটি একটি সেবামূলক (Charitable) কোর্স। সে কারণে এই কোর্সটি সবার জন্যে উন্মুক্ত নয় যদিও এই কোর্সটির একটি নির্ধারিত ফী বা মূল্য রয়েছে।   
  
বাংলাদেশে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ব্যবসা করতে চান না, তারা প্রায় সবাই চাকরি করতে   চান। একটি ছেলে বা মেয়ে ছোট বেলা থেকেই বেড়ে ওঠে এই স্বপ্ন বুকে নিয়ে যে, বড় হয়ে সে একটা ভালো চাকরি করবে। আজ যদি কলেজ বা ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া কোন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, “লেখাপড়া শেষ করে আপনি কী করবেন?” আর এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি যদি বলেন যে, “লেখাপড়া শেষ করে আমি ব্যবসা করতে চাই”, তাহলে ধরে নেয়া হয়- তার মাথায় গণ্ডগোল আছে অথবা তিনি উদ্ভট বা আজে বাজে চিন্তা করছেন। অর্থাৎ, আমাদের দেশে চাকরি করা বা করতে চাওয়াটাই স্বাভাবিক আর ব্যবসা করতে চাওয়াটা অস্বাভাবিক। এমনকি এদেশের পিতা-মাতারাও তাঁদের সন্তানদেরকে ব্যবসা করার অনুমতি দেন না (খুব অল্প সংখ্যক পিতা-মাতা আছেন  যাঁরা ব্যতিক্রম)এ কারণেই অপেক্ষাকৃত কম-মেধাবী-উচ্চশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত লোকেরা ব্যবসা করে বিত্তশালী হন আর তুখোড় মেধাবীরা ভারী ভারী সার্টিফিকেট নিয়ে পাস করে আসার পর ওই কম মেধাবী বা স্বল্প শিক্ষিতদের দাসত্ব মেনে নেয়, তাদের গোলামী করে। কথাটা এভাবে বলবার জন্যে আমরা ক্ষমা চাইছি। কিন্তু অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যি যে, এদেশের পিতা-মাতারা তাঁদের সন্তানদেরকে পরম যত্নে লালন-পালন করেন, খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া শেখান একটি মাত্র স্বপ্ন বুকে নিয়ে, তা হলো- তাঁদের সন্তান বড় হয়ে কারও না কারও গোলামী করবে। এ দেশের প্রায় শতভাগ  লোকই এভাবে চিন্তা করেন। আমরা মনে করি এটা আমাদের দেশের মানুষের চিন্তাগত একটি বড় ধরনের ত্রুটি বা ভুল। আমরা (PIGFT)   সম্পূর্ণরূপে এই চিন্তার বিপক্ষে। আমরা এই পুরাতন  চিন্তাকে ভাঙতে চাই। (অবশ্য আমরা একারাই এটা করে ফেলব তেমনটি বলছি না। তবে কাউকে না কাউকে তো শুরু করতে হবে! আমরা সেই শুরুটা করলাম। আস্তে আস্তে সচেতনতা বাড়বে, অন্যরাও এগিয়ে আসবে। এভাবেই আমাদের দেশের মানুষের চিন্তার পরিবর্তন ঘটবে।) আমরা চাই   চাকরি এবং ব্যবসা দু’টিকেই এদেশে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া হোক, দু’টিকেই স্বাভাবিকভাবে দেখা হোকযদিও চাকরির চেয়ে ব্যবসাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত কেননা একজন মানুষ যখন চাকরি করেন, তখন তিনি কেবল নিজেরই উন্নতি করেন সেটা কম-বেশি যা-ই হোক না কেন। পক্ষান্তরে আপনি যখন ব্যবসা করে সফল হচ্ছেন, তখন আপনি নিজের বিলাসবহুল জীবন পাচ্ছেন,  আপনার সাথে হাজার হাজার লোক কাজ করছেন তথা আপনি তাদের জন্যে কর্ম-সংস্থান সৃষ্টি করছেন, আপনি সরকারকে বিপুল পরিমাণে ট্যাক্স-ভ্যাট দিয়ে দেশের জন্যে অবদান রাখছেন, আপনি  বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, আর এ সবকিছু চাকরির মাধ্যমে কখনোই করা সম্ভব নয়। তাই তো ব্যবসা। চাইলেই আপনি নিজেকে এমন অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেন বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পে ব্যবসার মাধ্যমে।

PIGFT –এর বাইং হাউজ প্রোগ্রাম পরিচালনার মূল উদ্দেশ্য হলো উদ্যোক্তা তৈরি করা তথা ব্যবসা-বিদ্বেষী মনোভাবের পরিবর্তন ঘটানো। তাই বাইং হাউজ ব্যবসায় আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে থেকে বাছাই করে বেশি সম্ভাবনাময় ব্যক্তিবর্গকে Buying House Operation Course –এ ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। আর এ বাছাই প্রক্রিয়ায় আগ্রহী প্রার্থীদেরকে একটি মনস্তাত্ত্বিক (Psychological) টেস্ট দিতে হয়। যারা টেস্টে অকৃতকার্য হন, তারা কোর্সে ভর্তির সুযোগ পান না। আর যারা টেস্টে কৃতকার্য হন, তারা কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। কোর্সে ভর্তি হবার পর শুরু হয় দুইটি প্রক্রিয়া। একঃ নিয়মিত ক্লাস করা, দুইঃ ব্যবসার জন্যে আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা অর্থাৎ, ব্যবসার জন্যে যা যা দরকার, তা তৈরি করতে থাকা। যখন কোর্স শেষ হবে, তখন আনুষঙ্গিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন হবে। এরপর শুরু হবে বিজনেস অপারেশন তথা মার্কেটিং। এভাবে কোর্সের শুরু থেকে পরবর্তীতে  ব্যবসায় সফল হওয়া পর্যন্ত যতগুলো ধাপ আছে, তার সকল ধাপে আপনি আমাদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকবেন। আপনি কাজ করবেন আর প্রতিনিয়ত আমরা আপনার পাশে থাকব পথপ্রদর্শক হিসেবে। অর্থাৎ, আপনাকে সফল করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য আর আপনি যখন সফল হন, কেবল তখনই আমাদের এ প্রকল্প সফল বলে আমরা মনে করি। যেহেতু এ পুরো প্রক্রিয়ায় একজন উদ্যোক্তার পেছনে অনেক সময় ও শ্রম দিতে হয়, সেহেতু আমরা টেস্টের মাধ্যমে বেশি সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা নির্বাচন করি যাতে আমাদের উদ্দেশ্য সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পক্ষান্তরে যারা টেস্টে অকৃতকার্য হন, তারা এই ব্যবসার জন্যে অযোগ্য এটা আমরা বলি না। তবে হ্যাঁ, তাদের সম্ভাবনা কম। আমরা আমাদের পূর্ব-অভিজ্ঞতা থেকে এটাই পেয়েছি। সে কারণে আমরা তাদেরকে আমাদের সাথে সংযুক্ত না করে তাদের কিছু টাকা ও মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে দিই   

টেস্ট প্রসঙ্গঃ আমরা মনে করি, এ ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্যে একজন মানুষের মধ্যে কতকগুলো মানবীয় গুণ থাকা আবশ্যক। সেই গুণগুলো আপনার মধ্যে আছে কি-না, এই টেস্টের মাধ্যমে সেটাই বোঝার চেষ্টা করা হয়। এই টেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্যে আপনাকে কোন ফী বা টাকা পয়সা দিতে হবে না। এমনকি আপনাকে আমাদের অফিসেও আসতে হবে না। আপনি টেস্ট দেবার আগ্রহ প্রকাশ করলে আপনাকে Skype (স্কাইপ)-এ সংযুক্ত করা হবে। তারপর সাত থেকে দশ দিন আপনার সাথে কথা বলা হবে এবং আপনাকে পর্যবেক্ষণে (Study and Observation) রাখা হবে। টেস্ট পিরিয়ডে আলোচনার জন্যে আপনার সুবিধাজনক সময়কে গুরুত্ব দেয়া হবে। টেস্ট শেষে আপনার ফল যা-ই হোক, তার কারণ আপনাকে ব্যাখ্যা করা হবে। অর্থাৎ আপনি কোন্‌ কারণে পাস করলেন বা ফেইল করলেন, সেটা আপনাকে জানানো হবে। এই টেস্টে অকৃতকার্য হয়েও অনেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এভাবে, “আমার মধ্যে এই গ্যাপগুলো-যে ছিল, তা আগে জানতাম না, এখন জেনে ভালোই হলো, নিজেকে আরও ভালোভাবে তৈরি করতে পারব।”                

আপনি যদি টেস্টে উত্তীর্ণ হন, তাহলে আপনাকে আমাদের অফিসে আসতে হবে ভর্তির জন্যে। তারপর থেকে শুরু হবে আপনার নতুন যাত্রা যা আপনার জন্যে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে ইন্‌শা আল্লাহ্‌। এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো- এই টেস্টকে ভয় পাবেন না। আপনার মধ্যে সেসব গুণাবলি যদি থেকে থাকে, তাহলে আপনি অবশ্যই পাস করবেন আর সেক্ষেত্রে আমরা আপনাকেই খুঁজছি। কারণ, একটি কথা আমরা সবাই জানি, “বীরভোগ্যা এ বসুধা।” যারা বীর তারা পৃথিবীকে ভোগ করে, আর যারা বীর নয়, পৃথিবী তাদেরকে ভোগ করে।                                            

কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিতঃ                
কোর্সের নামঃ Buying House Operation Course
কোর্সের মেয়াদঃ ৪ (চার) মাস
কোর্সের সিলেবাসঃ প্রায় ৫০টি টপিক রয়েছে এই সিলেবাসে। ব্যবসা করার জন্যে যা যা দরকার, এই সিলেবাস তা সবই কাভার করে।

কোর্স ফীঃ ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা যা ভর্তির সময় এককালীন পরিশোধ করতে হবে। কোর্স চলাকালীন বা কোর্স পরবর্তী তত্ত্বাবধানের জন্যে কোনো ফী বা টাকা-পয়সা নেয়া হয় নাঅর্থাৎ ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকার বিনিময়ে আপনি কোর্স করতে পারবেন এবং কোর্স করবার পরেও যতদিন খুশি পরামর্শ নিতে পারবেন 

ক্লাসঃ সপ্তাহে দুইটি ক্লাস (প্রতিটি ক্লাস দুই ঘণ্টা করে) ভর্তির পরে ক্লাস রুটিন জানিয়ে দেয়া হয়।
পরীক্ষাঃ মোট তিনটি পরীক্ষা হয়। কোর্স চলাকালীন দুইটি আর কোর্স শেষে হয় ফাইনাল পরীক্ষা।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি টেস্ট দিতে আগ্রহী হন, তাহলে 01779-59 83 79 এই নাম্বারে যোগাযোগ করে আপনার টেস্টের সময়-সূচি জেনে নিন আর যদি টেস্ট দিতে আগ্রহী না হন, তাহলে নিচের বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে জানুন


টেস্ট দিতে না চাইলে বিকল্প ব্যবস্থা:

অনেক মানুষ রয়েছেন যারা টেস্ট দিতে চান না অথচ নিজ দায়িত্বে ব্যবসাটা চেষ্টা করতে চান। তাদের মধ্যে থেকে কিছু মানুষ এভাবে বলেছেন, “পারা বা না-পারা পরের কথা, চেষ্টা করতে দোষ কী?” হ্যাঁ, চেষ্টা করতে কোন দোষ নেই। নিজ দায়িত্বে আপনি চেষ্টাটা করতেই পারেন। এ-কথাটি মাথায় রেখে এবং অনেকের অনুরোধ বিবেচনা করে আমরা আপনাদের জন্যে একটা নতুন ব্যবস্থা চালু করেছি যা আগে ছিল না।  

টেস্ট দিতে না চাইলে আপনি সময়সীমা-চুক্তি ভিত্তিক কোর্স করতে পারেন বা পরামর্শ (Consultancy) নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রথম ৬ (ছয়) মাস ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা করে, তারপর থেকে প্রতি মাসে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা করে ফী প্রজোয্য হবে। একবারে সর্বনিম্ন ৩ (তিন) মাসের চুক্তি করা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট চুক্তির পুরো ফী শুরুতেই এককালীন পরিশোধ করতে হবে। মনে করুন, আপনি প্রথমেই ৩ মাসের চুক্তি করতে চাইছেন, তাহলে শুরুতেই আপনাকে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা প্রদান করতে হবে। এই তিন মাস পরে আপনার যদি আর পরামর্শ প্রয়োজন না হয়, অথবা আপনি যদি নতুন করে আর চুক্তি করতে না চান, তাহলে আপনাকে আর কোন ফী প্রদান করতে হবে না। আবার ৬ (ছয়) মাস অতিবাহিত হবার পরে আপনি যদি নতুন করে আরো ৪ (চার) মাসের চুক্তি করতে চান, তাহলে আপনাকে (৫,০০০X৪)= ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকা প্রদান করতে হবে।   

এবার আপনি-ই সিদ্ধান্ত নিন যে, কোন্ পথে অগ্রসর হবেন আপনার বায়িং হাউজ ব্যবসা নিয়ে।    

আপনি যদি উপরিউক্ত দুইটি পদ্ধতির কোনটাতেই আগ্রহী না হন, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ না করার জন্যে আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে মনোযোগ সহকারে এই লেখাটি পড়বার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।     

পুনশ্চঃ যাঁরা দেশের জন্যে কাজ করেন (চাকরি বা ব্যবসা), তাঁদের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল।